আজ ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শেষ কর্মদিবসে ভালোবাসায় সিক্ত আল্লামা মাহমুদুল হক নঈমী


আমজাদ হোসেন,আনোয়ারা: শিক্ষা, সেবা, আধ্যাত্মিকতা ও মানবিক গুণাবলীর উজ্জ্বল প্রতীক পীরজাদা আল্লামা আলহাজ্ব অধ্যক্ষ কাজী সৈয়দ মাহমুদুল হক নঈমী (মাঃজিঃআঃ)

গতকাল ছিল তাঁর কর্মজীবনের শেষ দিন। আনোয়ারা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মালঘর আহমদিয়া তৈয়্যবীয়া সৈয়্যদিয়া সিনিয়র মাদরাসায় দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন এই গুণী আলেম।

বিদায়ের মুহূর্তটি ছিল আবেগঘন। সহকর্মী, ছাত্র, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতিতে তিনি সিক্ত হন ভালোবাসায়। সবার চোখে অশ্রু, হৃদয়ে গভীর কৃতজ্ঞতা।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের প্রখ্যাত সৈয়্যদ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতা মরহুম আল্লামা সৈয়্যদুল খায়ের নঈমী (রহঃ) ছিলেন হযরত নঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী (রহঃ)-এর খলিফা। পিতার আদর্শ অনুসরণ করে তিনি আত্মিক পথচলায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন এবং শিক্ষা ও সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন।

শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন ডুমুরিয়া মোহাম্মদিয়া কুদ্দুসিয়া আলিম মাদরাসায়। পরে মালঘর মাদরাসায় দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করে গড়ে তুলেছেন বহু আলেম ও সমাজসেবক।

তাঁর হৃদয়ছোঁয়া বক্তব্য, সদয় ব্যবহার ও নৈতিক দৃঢ়তা সকল শ্রেণির মানুষের মনে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। তিনি ছিলেন সম্মান, ভালোবাসা ও আস্থা অর্জনের এক জীবন্ত প্রতীক।

আধ্যাত্মিক জীবনেও তিনি হয়েছেন সার্থক। তিনি বিয়ের সূত্রে প্রথিতযশা অলিয়ে কামেল হযরত শাহ্ সুফি আলী রজা ওরফে কানু শাহ্ (রহঃ)-এর বংশধর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত হন।

পারিবারিক জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। বড় ছেলে এস এম আশরাফ রেজা তানিম, শাহ মোহছেন আউলিয়া হজ কাফেলার প্রোপ্রাইটর এবং ছোট ছেলে এস এম তাওসিফ রেজা ফাহিম, চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী।

তিনি শিক্ষকতা ছাড়াও একজন নিবেদিতপ্রাণ সংগঠক ও সমাজসেবক। আশির দশকে বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর সাংগঠনিক যাত্রা। বর্তমানে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশ, আনোয়ারা উপজেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০৩ সাল থেকে অদ্যাবধি বরুমচড়া ইউনিয়নের নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার হিসেবে সততা, দক্ষতা ও সম্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

একজন শিক্ষাব্রতী, আধ্যাত্মিক রাহবার ও মানবিক সমাজনায়ক হিসেবে তিনি সমাজের অসংখ্য মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন উদার হাতে। তাঁর কর্ম, আদর্শ ও সেবার এই অধ্যায় ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর